হিজলায় বালুমহল ঘিরে ফের উত্তেজনা

হিজলায় বালুমহল ঘিরে ফের উত্তেজনা: নদীভাঙনের শঙ্কায় মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান
মোঃ হাবিবুল্লাহ, হিজলা প্রতিনিধি বরিশালের
হিজলা উপজেলার শাওরা সৈয়দখালী এলাকায় মেঘনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের প্রতিবাদে মানববন্ধন ও স্মারকলিপি প্রদান করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
শুক্রবার (৯ মে) বিকেলে আয়োজিত এই কর্মসূচির মাধ্যমে আবারও সামনে আসে নদীভাঙন, জেলেদের জীবিকা হুমকির মুখে পড়া এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার অভিযোগ। মানববন্ধন ও দাবিপত্র বিকেল ৩টায় হিজলা নদী ও ভূমি রক্ষা কমিটির ব্যানারে খুন্না বন্দর ও জেলা পরিষদ ডাকবাংলো সংলগ্ন হিজলা-মুলাদী প্রধান সড়কে এই কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। সব শ্রেণি-পেশার মানুষ "নদী বাঁচাও, হিজলা বাঁচাও", "বালু উত্তোলন বন্ধ করো" প্রভৃতি স্লোগান দিতে দিতে পুরো এলাকা মুখরিত করে তোলে।
মানববন্ধনে অংশ নেন ভাষা আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক ও ভূমি রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক নায়েব আবদুল কুদ্দুস, মুক্তিযোদ্ধা, জনপ্রতিনিধি, জেলে, শিক্ষক, নারী-শিশু ও শিক্ষার্থীসহ কয়েক হাজার মানুষ। স্থানীয় জেলে মজিবর মাঝি বলেন, “নদীতে ড্রেজার চললে মাছ পাই না। বলগেট এসে জাল ছিঁড়ে ফেলে। কিছু বললেই হুমকি দেয়। এখন আর মাছ ধরতেও সাহস হয় না।”
অভিযোগ ও শঙ্কা বক্তারা কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, একাধিকবার বসতভিটা নদীগর্ভে হারিয়েছেন তারা। এখন যেভাবে বালু তোলা হচ্ছে, গোটা ইউনিয়ন মানচিত্র থেকেই মুছে যাওয়ার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ইজারা দেওয়া স্থান ছাড়াও আশপাশের মৌজায় নিয়মবহির্ভূতভাবে বালু উত্তোলন করছে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর বি এন্টারপ্রাইজ।
অভিযোগ রয়েছে, টেন্ডারে প্রতিদ্বন্দ্বীদের বেকায়দায় ফেলে তারা ইজারা নেয় এবং রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে প্রতিনিয়ত স্পট পরিবর্তন করে বালু তুলছে। প্রশাসনের বক্তব্য ও দাবিসমূহ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ ইলিয়াস শিকদার বলেন, “জেলা প্রশাসনের অনুমোদিত নিয়মেই বালুমহল ইজারা দেওয়া হয়েছে। কেউ নিয়ম লঙ্ঘন করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
” বক্তারা দাবি করেন, বড় ধরনের ক্ষতির আগেই বালুমহলটির ইজারা বাতিল করতে হবে এবং নদীর পাড়ে রিভেটমেন্ট ও জিওব্যাগ স্থাপন করতে হবে। পাশাপাশি ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনে সরকারি উদ্যোগেরও দাবি জানান তারা।
স্মারকলিপি প্রদান মানববন্ধন শেষে নৌ-পরিবহন, শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) ড. এম সাখাওয়াত হোসেন বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। তিনি আশ্বাস দেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে বিবেচনা করে জনগণের স্বার্থে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।